
বর্তমান যুগে স্মার্ট ডিভাইস আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভি ও অন্যান্য গ্যাজেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সুবিধা এনে দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তির এই সুবিধাগুলোই কি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে? গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার মানসিক স্ট্রেস বাড়াতে পারে।
কিভাবে স্মার্ট ডিভাইস মানসিক স্ট্রেস সৃষ্টি করে?
১. অতিরিক্ত নোটিফিকেশনের চাপ:
স্মার্টফোনের একের পর এক নোটিফিকেশন আমাদের মনোযোগ ভেঙে দেয়। কাজ বা বিশ্রামের সময়ে এই নোটিফিকেশনগুলো আমাদের উদ্বেগ বাড়ায় এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
২. সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি:
সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদের জীবনের সাথে নিজের তুলনা, লাইক বা কমেন্টের জন্য অপেক্ষা, এবং নেতিবাচক মন্তব্যগুলো স্ট্রেস বাড়ায়।
৩. পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব:
স্মার্ট ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার ঘুমের সময় কমিয়ে দেয়। রাতের বেলা স্ক্রিনের নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে, যা আমাদের ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার ফলে মানসিক স্ট্রেস বাড়ে।
৪. অনবরত সংযুক্ত থাকার চাপে:
স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা সবসময় কাজ, পরিবার, এবং বন্ধুদের সাথে সংযুক্ত থাকি। এটি কখনো কখনো বিশ্রামের সময়কেও নষ্ট করে দেয়। একটানা সংযুক্ত থাকার চাপ আমাদের মানসিক শক্তি ক্ষয় করে।
মানসিক স্ট্রেস কমানোর উপায়
১. সময় নির্ধারণ:
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করুন। কাজ এবং বিশ্রামের জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন।
২. নোটিফিকেশন নিয়ন্ত্রণ:
প্রয়োজনীয় নয় এমন অ্যাপ্লিকেশনের নোটিফিকেশন বন্ধ করুন। কাজের সময় ডিভাইসের নোটিফিকেশন সাইলেন্ট মোডে রাখুন।
৩. স্ক্রিন টাইম কমানো:
প্রতিদিন কতক্ষণ স্ক্রিনের সামনে কাটাচ্ছেন তা মনিটর করুন এবং চেষ্টা করুন এটি কমানোর। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে “ডিজিটাল ডিটক্স” পালন করুন।
৪. অফলাইন সময় তৈরি:
দিনে কিছু সময় সম্পূর্ণ অফলাইনে কাটান। প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো, বই পড়া, বা শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন।
৫. মানসিক প্রশান্তি চর্চা:
যোগব্যায়াম, ধ্যান, এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো মানসিক প্রশান্তি আনার পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন।